অনুধ্যান
- Details
এক সকালে ওরা রাখালকে তুলে
ওকে পেটাতে পেটাতে
অপেক্ষমান জীপটার ভেতরে ঠেসে
নিয়ে চলে গেল।
আমার কী আসে যায় তাতে
যতদিন আমার হেঁশেলে
দুধ-ভাত মজুত আছে?
- Details
'আমাকে আমার মত থাকতে দাও...' - হ্যাঁ, এই কথাটা বেশ গম্ভীর গম্ভীর গলায় বলতেই পারে নতুন বঙ্গাব্দ - নেই নেই করে বাংলা চতুর্দশ শতক এইবার আঠেরোয় পা দিয়েই ফেলল যে ! আর কে না জানে, আঠেরো বছর বয়স মানেই বড় হয়ে যাওয়া, কাগজে কলমে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যাওয়া, হয়ত বা অনেক কিছু করার ছাড়পত্রও পাওয়া !আঠেরো বছর আগে যখন বঙ্গাব্দ ১৪০০য় পা দিল, মনে আছে তখন নানান উতসব উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে তাকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। হিসেব করে দেখতে গেলে, সেই আঠেরো বছর আগে আমি নিজেও আঠেরোর আশেপাশেই ছিলাম। মানসিক ভাবে কতটা প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছিলাম তা আজ আর সত্যিই মনে নেই, কিন্তু কাগজে কলমে "বড়" হয়ে কোন একটা পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রথম বার ভোট দিয়ে এসে , বাঁ হাতের মধ্যমায় বেগুনী রঙের দাগটাকে দেখে দেখে বেশ কয়েকদিন যে খুব উত্তেজিত বোধ করেছিলাম তা বলতে পারি।
- Details
আমার এবারের পুজো খূব ব্যস্ততায় কাটছে। তাই ইচ্ছা থাকলেও পুজোয় নতুন পোস্ট দিতে পারছি না। মনের মধ্যে নানা কথা ঘুরছে ফিরছে, কিন্তু লেখার সময় নেই। কেন নেই, সেটা বলার জন্যও সময় চাই।
হাজার ব্যস্ততার ফাঁকেও আজ ষষ্ঠীর সন্ধ্যাবেলা কিছু পড়শির সাথে বেরিয়েছিলাম পাড়ার কাছাকাছি ঠাকুর, বা বলা ভাল, মন্ডপ দেখতে। বিশাল বিশাল মূর্তি, প্রচুর আলো, অসাধারণ পরিশ্রমে সৃষ্ট শিল্পকলায় সাজানো মন্ডপ…চোখ জোড়ানো, মন ভোলানো। পাঁচটাকা দিয়ে প্লাস্টিকের বাঁশি কিনে ফেললাম – ফুঁ দিলেই সামনে লাগানো গোটানো অংশ হাওয়া পেয়ে লাফিয়ে উঠছে…সঙ্গী ছোটদের সাথে পাল্লা দিয়ে বাশিঁ বাজালাম, আইসক্রিম খেলাম, ঘটি-গরম খেলাম, লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখলাম…
এত আলো, এত আনন্দের মধ্যে হঠাত চোখে পড়েছিল রাস্তার ধারে শ্রান্ত, ক্লান্ত, দীন এক শরীর …হুল্লোড় – রোশনাই এর তোয়াক্কা না করে ঘুমিয়ে আছে…অথবা সে হয়ত অসুস্থ এবং অভুক্ত…
গত মাস দুই তিনেক যাবত খবরের কাগজে এবং টিভি চ্যানেলে অনেক ছবি দেখেছি – খরার ছবি, বন্যার ছবি, ধ্বংসের ছবি, দুর্ঘটনার ছবি, যুদ্ধের ছবি – সেইরকমই এক ছবি এঁকে ফেলেছিলাম কোন এক মূহুর্তে। অনেক দুর্গার পুজো হয়ত এইরকমই হয়।
বাড়ী ঢোকার আগে প্লাস্টিকের লাল রঙের বাশিঁটা দিয়ে দিলাম আমার আবাসনের পুজোয় যিনি ঢাক বাজাতে এসেছেন, তাঁর ছোট্ট ছেলেকে। ওর নাম অবশ্য জানিনা – হতে পারে গনেশ , বা কার্তিক…
- Details
সপ্তাহ খানেক আগে, গত শনিবার, ছিল কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা। বেশিরভাগ বাঙালি হিন্দু পরিবারের মত আমার বাড়িতেও এই পুজো হয়। পুজোর অঙ্গ হিসাবে মন্ত্র এবং পাঁচালীর সঙ্গে থাকে ব্রতকথা পড়ার নিয়ম। ব্রতকথা হল সাধারনতঃ একটি অলৌকিক গল্প, যেখানে সাধারন মানুষের নানা সমস্যা এবং তার সমাধানের মধ্যে দিয়ে আরাধ্য দেব-দেবীর মাহাত্ম্য প্রচার হয়। এইসব ব্রতকথা একসঙ্গে করে “মেয়েদের ব্রতকথা” বা “বারোমাসের ব্রতকথা” – এই ধরনের নাম দিয়ে সঙ্কলন আকারে প্রকাশ করা হয়।
আমাদের বাড়ীর পুজোয় দুটি ব্রতকথা বলা হয়। তার মধ্যে একটি পড়া হয়ে এই ধরনের একটি বই থেকে; অন্যটি আমার ঠাকুমার স্মৃতি-নির্ভর। দুটি গল্পই নানারকমের বাঁক ঘুরে শেষ অবধি মা লক্ষ্মীর ক্ষমতা ও মাহাত্ম্য বর্ণনা করে। মুশকিল হল, গল্পের ফাঁক-ফোকর এত বেশি যে, আমরা যারা পড়ি এবং শুনি, তারা প্রতিবারই পাঠ চলাকালীন নানাবিধ যুক্তি এবং প্রশ্ন খাড়া করি- শেষ অবধি ব্যাপারটা হাসাহাসি করে শেষ হয়। এতে মা লক্ষ্মী রেগে যান, না কি অবোধ সন্তান বলে আমাদের মাপ করে দেন ঠিক জানিনা, তবে প্রতি বছরই একই ব্যাপার ঘটে আমাদের বাড়ীর পুজোয়।