রম্যরচনা
- Details
শব্দদুটির সংজ্ঞা লেখো এবং দুটিকে ব্যবহার করে বাক্য রচনা করো।
১) অভিমান, ২) অপমান
উত্তরঃ
১) অভিমানঃ এক্স মাইনাস ক্যাটেগরির ব্যক্তিগত অনুভূতি। যেটা পাব ভেবেছিলাম সেটা না পেয়ে যেটা হয় ; সেই হওয়াটা যে ভুল, সেটা জনসমক্ষে স্বীকার করাটা বাধ্যতামূলক, নইলে অভিমানের কোনো মূল্য নাই।
২) অপমানঃ জেড প্লাস ক্যাটেগরির ব্যক্তিগত অনুভূতি, যা দিনে কতবার কেন , কখন, কোথায় , কী জন্য হবে বলা খুব মুশকিল। এই অনুভূতি নিয়মিত জনসমক্ষে প্রচার করা জরুরী,নইলে অপমানবোধের কোনো মূল্য নাই।
- Details
ভাগ্যিস ফেসবুক ছিল - নইলে কি আর নিবেদিতা লেখার জন্য এমন বিষয় ভাবতো ! তবে কিনা ফেসবুক থাকার ফলে কী কী হয়েছে আর কী কী হয়নি, সেটার তালিকা তো বেজায় দীর্ঘ, আর সেসব কথা লিখলে কিনা একটা আস্ত অভিধান মাফিক বই হয়ে যাবে, তাই জায়গার, ধৈর্য্যের এবং সময়ের অভাবে, সব কিছু না লিখে মোটে দুটো বিষয় নিয়ে লিখব।
- Details
অবশেষে তাঁরা এসেছেন। আমাদের বাড়িতে থাকতে এসেছে্ন।কিন্তু যেখানে থাকবেন ভেবেছিলাম, সেখানে থাকছেন না। নিজেদের মত জায়গা খুঁজে নিয়েছেন। এক চড়াই-দম্পতি, সাথে নিশ্চয় গোটা তিন-চারেক কুচো-কাচা। চোখে দেখতে পাচ্ছি না, সকালবেলার গলাবাজি শুনে আন্দাজ করতে হচ্ছে।
- Details
'গান ধরেছেন গ্রীষ্মকালে ভীষ্মলোচন শর্মা
আওয়াজ খানা দিচ্ছে হানা দিল্লি থেকে বর্মা ...'গান গাওয়ার জিনিষ। গান করাও যায়। গান ধরাও যায়। গান বাঁধাও যায়। গান বানানোও যায়। এত এত ক্রিয়াপদের ব্যবহার দেখে বোঝাই যাচ্ছে গান খুবই বহুমুখী একটা ব্যাপার।'গানের ওপারে' নামে একটা সিরিয়াল তৈরি হয়েছিল। সেখানে গানের থেকে বেশি প্রেম আর ডিজাইনার বাড়িঘর-জামাকাপড় ছিল।গান-পাউডার খুব ঝাল, কিন্তু গরম ভাতে মেখে খেতে খুব ভাল লাগে।গান্ধারী সারাটাজীবন অকারণে চোখ বেঁধে রাখলেন।
তিনি গান্ধারের মেয়ে বলে নাম গান্ধারী, কিন্তু তাঁর ভাইদের নাম কেন শকুনি আর মৎকুনি এই নিয়ে কোন বিগ-গান সম্মেলনে গবেষণাপত্র লেখা উচিত।'গান্ধর্বী' বানী বসুর লেখা একটা উপন্যাসের নাম। আমার পড়ে খুব ভাল লেগেছিল।গান্ধর্ব মতে বিয়ে করলে বাজে খরচা অনেক কমানো যায়, ভুল ভাল লোককে ডেকে এনে মাংস পোলাও খাওয়াতেও হয়না, আর হাবিজাবি উপহারে ঘর বোঝাই ও হয় না।গান্ধী পদবীযুক্ত মানুষদের নিয়ে চতুর্দিকে সর্বদাই বড় বেশি আলোচনা হয়। এতে ওনাদের প্রাইভেসি নষ্ট হয়।গান্ধীপোকার গায়ে বেজায় গন্ধ। যারা গান্ধীপোকা দেখেনি, তারা বুঝবেনা সেটা কি ভয়ানক।Günter Grass এর নামের শুরু Gün দিয়ে হলেও, উচ্চারণ গুন্টার গ্রাস। কেন, সেটা জার্মানরা জানে।গানের আগে 'বা' লাগালে সুন্দর ফুল-ফল-গাছ-পালায় ভরা এক ছবি মাথায় আসে।গানের পরে কিছু একটা লাগালে সেই শব্দটা সোশ্যাল মিডিয়াতে লেখা যায় না।শেষে একটা কথাই বলব ম্যাডাম/ স্যারঃযত খুশি গান ধরুন, GUN ধরিবেন না।- হ্যাপি গান দিবস।(গত বছরের লেখা )
https://www.facebook.com/mahaswetasmusings/photos/304052790132605
- Details
পছন্দের ফলকে ঘিরে চেতনা প্রবাহে ঘুরতে থাকা টুকরো যত ছবি
- Details
হোম-অফিস হওয়ার মজা হল, রোজ রাস্তায় বেরতে হয়না। অফিস টাইমের ভীড়, ঘামের গন্ধ ভরা বাস, হঠাৎ থেমে যাওয়া মেট্রো রেল , অটোরিকশা বা ট্যাক্সি স্ট্রাইক, কিছু নিয়েই খুব একটা মাথা ঘামাতে হয়না। কিন্তু এর একটা কুফল ও আছে। মাঝেমধ্যে কাজের চক্করে বেরোতে হলে পুরো ঘেমে-নেয়ে-কেস-খেয়ে একশা কান্ড। তার মধ্যে যদি আবার বৃষ্টি পড়ে, ঝড় ওঠে বা মিটিং-মিছিল থাকে, তাহলে তো হয়েই গেল। আমি পুরো, ইংরেজিতে যাকে বলে, 'ক্লু-লেস' সেটাই হয়ে যাই। তখন আমাকে দেখে কে বলবে এই আমি লোকাল ট্রেনে ডেলি-পাষন্ডগিরিও করেছি।
- Details
গত কয়েকদিন ধরে যখনি বৃষ্টি পড়ছে, মাঝে মাঝেই ভুলে যাওয়া স্বপ্নের মত হারিয়ে যাওয়া ছোটবেলার একটা ঘটনা বার বার মনে পড়ে যাচ্ছে…প্রতি বর্ষাতেই পড়ে…আমার আর ভাইয়ের ঝুলন সাজানোর কথা। এবারো যখন মনে পড়ল, তখন ভাবলাম একেবারে ভুলে যাওয়ার আগে লিখে রাখি আমার সেই সব স্মৃতি। এইসব ভাবতে ভাবতেই, গতকাল ক্যালেন্ডারের পাতায় চোখ বোলাতে গিয়ে দেখেছিলাম আজ ঝুলনযাত্রা। ঝুলন পূর্ণিমার দিনে হয় বলে একটা ভুল ধারনা ছিল, দেখলাম আজ কিন্তু পূর্ণিমা নয়…ভুল ধারনা তো হওয়ার কথা নয়…স্পষ্ট মনে আছে ‘রাজকাহিনী’তে পড়া বাপ্পাদিত্যের সঙ্গে সেই রাজকন্যার ঝুলন উৎসবের কথা…সেট তো পূর্ণিমা রাত ই ছিল…টাইপ করা থামিয়ে উঠে গিয়ে ধুলো ঝেড়ে বার করলাম আমার সেই প্রিয় বই…আর হ্যাঁ, ঠিকই তো…অবনীন্দ্রনাথ তো সত্যি লিখেছেন পূর্ণিমার রাতে শোলাঙ্কি রাজকুমারির সাথে বাপ্পাদিত্যের ঝুলন খেলার গল্প ।…তাহলে ক্যালেন্ডার আজকের দিনটা পূর্ণিমা দেখাচ্ছে না কেন? …অতএব ভরসা গুগল!!দেখলাম অনলাইন পঞ্জিকা বলছে ৩১শে জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট হচ্ছে ঝুলনযাত্রা!
- Details
দুগ্গা ঠাকুর ভালো
তার রূপে ভুবন আলো
লক্ষ্মী সরস্বতী
তারা সত্যি গুণবতী
দুগ্গা ঠাকুর ভালো
তার রূপে ভুবন আলো
লক্ষ্মী সরস্বতী
তারা সত্যি গুণবতী
ফুলবাবু কাত্তিক
যেন জামাইবাবু ঠিক
গনেশ দাদার ভুঁড়ি
হয় দিতে সুড়সুড়ি
বিদ্ঘুটে ওই অসুর
যেন আন্নাকালীর শ্বশুর।
না, এই ছড়া আমার লেখা নয়। এই ছড়া আমি শিখেছিলাম আমার বাবা-কাকাদের কাছে, যখন আমি তাঁদের কোলে কোলে ঘুরে দুগ্গা ঠাকুর দেখতে যেতাম। কার লেখা ছড়া , তাও জানিনা। কিন্তু ছোট্টবেলা থেকে শুনে শুনে মুখস্থ হয়ে গেছে।
একটু বড় হয়ে যখন শব্দগুলির মানে বুঝতে শিখলাম, তখন বুঝলাম এই ছড়ার বেশিরভাগ কথাগুলিই যথেষ্ট ন্যায্য। তবে যে দুটি পংক্তি সব থেকে বেশি মনের মধ্যে ঘুরত তা হল ' বিদ্ঘুটে ওই...শ্বশুর '; আন্নাকালী কে, আর অসুর কেনই বা তার শ্বশুরের মত দেখতে হতে যাবে, এই নিয়ে অনেক ভাবনা চিন্তা করেছি এক সময়ে।অনেক ভেবে ঠিক করেছিলাম, আন্নাকালী যেই হোক না কেন, অসুর কে তার শ্বশুর খেতাব দেওয়াটা আন্নাকালীর প্রতি সুবিচার হয়নি। অসুর বাপু অসুরই- সে আর কিছু হতে পারেনা।
কিন্তু প্রথম দুটি পংক্তি -
দুগ্গা ঠাকুর ভালো
তার রূপে ভুবন আলো-
এর মত সত্যি কথা বোধ হয় আর কিছু হয়না। পাঁচ থেকে পঁচাশি - সবাই এই কথায় ঘাড় কাত করবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। এই যে বর্ষা যেতে যেতেও ফিরে আসছে, তার মাঝেই হটাত হটাত করে ঝকঝকে নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মত সাদা সাদা মেঘ, সোনালি রোদ ঝিলিক দিয়ে দিয়ে উঠছে, দিঘীর জলে পদ্মফুল, বাগানের কোণ আলো করে ছড়িয়ে থাকা শিউলিফুল- এ সব দেখে অতি বড় বেরসিক ও মন বদলাবেন আর দু -দন্ডের জন্য প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে উপভোগ করবেন।আর আমি যদি বলি বাপের বাড়ি আসার আগে, শেষ বৃষ্টি্র জলে নেয়ে ধুয়ে, মুখে তুলোট মেঘের পাফ বুলিয়ে একটু সেজে নিলেন উমা,খোঁপায় জড়ালেন শিউলির মালা, হাতে নিলেন পদ্মকলি, পরণে তাঁর আসমানি রঙ জামদানি শাড়ি, যার জরি ঝলক আর সোনার আভরণের ছটা মিশে আছে শরত সকালের ঐ মিষ্টি সোনালি রোদে- তাহলে কেমন হয়?
দিনে সোনালি সূর্যালোক, রাতে পথের পাশে ঝলমল করতে থাকা আলোর মালা, আলোর তোরণ, আলোয় সাজানো মন্ডপ। দশভূজা মায়ের রূপের ছটায় সত্যিই যেন দিকবিদিক আলোক ময়। সেই আলো যেন ধুয়ে দিচ্ছে সব গ্লানি, মুছে দিচ্ছে সব কালিমা; ছড়িয়ে যাচ্ছে আনাচে-কানাচে - ফুটপাথের কোনায়- সিঁড়ির বাঁকে-ওভারব্রীজের নিচে-মেট্রোস্টেশনের ম্যুরালে-হাটে-বাজারে। ছেলে-মেয়ে সাথে নিয়ে চার দিনের জন্য বাপের বাড়ি এসেছেন উমা- এই চারদিন চাই না কোন মন খারাপ- মুখভার-দ্বেষ-কলহ। আলোকিত হোক সবার মন, আলোকিত হোক নিত্যদিনের জীবন।
লক্ষ্মী, সরস্বতী, কাত্তিক, গণেশ, আন্নাকালী আর- হ্যাঁ- এমনকি অসুর ও - এই ক'টা দিনে সবাই যেন থাকে ভাল, কারণ- দুগ্গাঠাকুর যে ভাল !
আলো জ্বালাও আলো
দুগ্গা ঠাকুর এল।
মুছিয়ে দেবে যতেক কালো
দুগ্গা বড় ভালো।
শারদীয়া প্যাপিরাস ২০১১ তে প্রকাশিত।
- Details
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অন্য সব অটোকে পেছনে ফেলে, দৈত্যের মত স্টেট বাস থেকে শুরু করে বেঁটেখাট মিনিবাস ( যারা একইরকম ভাবে তাড়াহুড়োয় থাকে) --- সবার বগলের তলা দিয়ে, পায়ের ফাঁকে গলে এগিয়ে যাওয়া। ভাবখানা অনেকটা 'আঠেরো বছর বয়স জানে না মানা' গোছের। কিছুতেই পরোয়া নেই, কাউকেই তোয়াক্কা নেই। জীবনে গতিই আসল। তাতে যদি পেছনের সিটে বসে থাকা রোগা পুরুষ ও মোটা মহিলাদের পেট গুলিয়ে ওঠে তো উঠুক; সামনের ডান দিকে বসা প্যাসেঞ্জারের হাঁটু, পাশ দিয়ে হুশ করে বেরিয়ে যাওয়া গাড়ির গুঁতোয় খুলে যদি যায় তো যাক!