একটা ওয়েবসাইটের , বা বলা ভালো ব্লগের নাম যখন রাখি ‘নকশি খাতা’, তখন বোঝাই যায় লেখালিখি করার কথা ভাবলে একটা খাতার কথাই প্রথমে মনে আসে। অথচ, বিশেষ করে প্রায় দুই দশক ধরে ওয়েবসাইট নির্মাণ নিয়ে কাজ করার পরে, ওয়েবপেজ, হাইপারলিংক, হাইপারটেক্সট ইত্যাদি আউড়ে যাওয়ার পরেও —তেমনটা হয়ত হওয়ার কথা ছিল না। তবুও হল। নিজের ব্লগের বাংলা নাম রাখলাম ‘নকশি খাতা’। ইংরেজিতে নাম রাখলাম, ‘The Embellished Notebook’।

সেলাই/ সীবন/ সূচীশিল্প আমার শখের হস্তশিল্প। মনে মনে কল্পনা করে নিলাম আমার এই ডিজিটাল খাতার পাতায় পাতায় নানা রঙের সুতো দিয়ে ফুটিয়ে তুলছি নানা ধরণের নকশা। কোনোটার সঙ্গেই কোনোটার মিল নেই; অমিলও যে খুব আছে, তা নয়। নানাবিধ কল্পনা বা ভাবনার নকশায় সজ্জিত আমার এই ডিজিটাল খাতা, যার পাতা বা ‘পেজ’গুলি একের অপরের সঙ্গে গেঁথে রয়েছে আমারই মনের মধ্যে লালিত একাধিক ধারার হাইপারলিংক-এর মাধ্যমে। 

নিয়ম করে লিখি না। রোজ ঘুম থেকে উঠে হাজার শব্দ বা সপ্তাহে একটা গোটা গল্প — এমন কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যে বাঁধা নই। যা যা লিখতে ইচ্ছে করে, সব কিছু লিখে উঠতে পারি না — বেশিরভাগটা সময়ের অভাবে, অনেকটা লিখলে তারপরে কী প্রতিক্রিয়া পেতে পারি সেই ভেবে, খানিকটা আলস্যের কারণে। তবুও, নেই নেই করে ছোটো-মেজো-বড়ো লেখা অনেকই লিখেছি। ২০০৮ সাল থেকে , বা হয়ত ২০০৭ সাল থেকে ব্লগ বজায় রাখার চেষ্টা করে গেছি। ২০০৮ এর মাঝামাঝি থেকে ২০২৩ অবধি আমার নিজস্ব সময়ের পুরোটা ব্যবহার করেছি ‘ইচ্ছামতী’-র জন্য। ইচ্ছামতীর জন্যেও নেই নেই করে কম লিখিনি। মাঝেমধ্যে কারোর নির্দেশে, বা কারোর অনুরোধে, এদিক-ওদিক টুকটাক লিখেছি। গত আড়াই বছর ধরে সহ-সম্পাদক রূপে যুক্ত আছি 'বইকথা' পত্রিকার সঙ্গে। সেখানেও নিয়মিত নানা স্বাদের বই নিয়ে আলোচনা করছি। 

মুশকিল হল, এই প্রায় ষোলো বছর ধরে এত এত লেখার পরেও, ‘ কিছুই লিখছি না কেন’ — এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতেই হচ্ছে। প্রশ্ন জাগে, 'কতটা লেখালিখি হলে লেখক হওয়া যায়?' [ এখান থেকে অবশ্য লেখক কে, কী লিখি, কেন লিখি ইত্যাদি গভীরতর সব প্রশ্ন উঠে আসবে ]। মোদ্দা কথা, বারবার এক প্রশ্ন শুনে হন্যে হয়ে ঠিক করলাম, আগে একখানা হিসেব কষে দেখি, ঠিক কতগুলো শব্দ লিখে ফেলেছি। দেখি একবার — কী কী, কেমন, কেমন, ভালো না মন্দ, পাঠকের পাতে দেওয়ার যোগ্য না অযোগ্য লেখা লিখেছি। তাই নিজের পঞ্চাশ বছরের জন্মদিনে, নিজেই নিজের পুরনো, অবহেলায় ফেলে রাখা ওয়েবসাইটটাকে ঝেড়ে-পুঁছে গোছালাম। এদিক ওদিক ছড়িয়ে থাকা তিন বাক্যের হাইকু থেকে তিন হাজার শব্দের নিবন্ধ অবধি সবকিছুই যত্নে একত্র করে রাখব,এমনটাই আশা। 

আমি বাংলাতেই বেশি লিখি। ইংরেজিতে অপেক্ষাকৃত কম। তাই এই ওয়েবসাইটে বাংলা এবং ইংরেজি, দুই ভাষার লেখাই রাখা থাকছে। কিন্তু এটা bilingual website বা দ্বিভাষী ওয়েবসাইট নয়। 

আমার এই ‘নকশি খাতা’-র বিভিন্ন পাতা উল্টেপাল্টে দেখে যদি ভালো লাগে, কিংবা খারাপও লাগে — আমাকে জানান। কেউ আমার ব্লগ পড়ছে জানলে আমার একটু লেখার উৎসাহ বাড়বে। 

বানান ভুল, ব্যাকরণ ভুল — এইসব নিয়ে বকবেন না। আমি জানি, অনেক ভুল আছে — বিশেষ করে পুরনো লেখাগুলিতে। যেগুলিকে শুধরাবো ভাবলেও শুধরানোর সময় মেলে না। কোনো লেখায় কোনো তথ্যে ভুল থাকলে অবশ্যই জানান।  

আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন mahasweta dot ray at gmail dot com - এই ইমেইল আইডিতে। অথবা হোয়াটস্‌অ্যাপে এই নম্বরে - ৭৪৩৯৮৭৪৭২১। 

[ ইংরেজিতে introduction  আবার অন্য কোনোদিন লিখব]